Sudip Ghoshal

 

webtostory



প্রথম পর্ব। 

অজয়পাড়ের  উপকথা

সুদীপ ঘোষাল 


অজয়নদের পাড়ে অবস্থিত কয়েকটি গ্রাম বর্ধিষ্ণু। সেইসব গ্রামের ছেলেরা ধনীর দুলাল।তারা কানডা,সিঙ্গাপুর,সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কিন্তু এখানকার বেশিরভাগ লোক গরীবের দলে। আর অজয়নদের আশেপাশের গ্রামগুলিতে কবি জয়দেব থেকে শুরু করে কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের বাসস্থল। আমাদের একটা ক্রিকেট খেলার দল ছিল গ্রামে।সঞ্জয়,সুদীপ্ত,বাবু,ভম্বল,টুলাদা,মিলুদা,তাপস,বুড়ো,রিলীফ,বিশ্বরূপ,পিনু,মিলু,অধীর,প্রতাপ,শ্রীমন্ত,মকন,ঝপণ, ধ্রুব,সাক্ষী ও আরও অনেক সদস্য ছিল।এখন ছোটদের ব্যাচে,ছোট্টু,পুলক,সুমন,সায়ন ও আরও অনেকে।



১৯৭৫ সাল থেকে অজয়নদের পাড়ে আশেপাশের  গ্রামের ছেলেদের নিয়ে বন্ধুদল।আমাদের বন্ধুদল সমাজসেবার কাজ  ও ভ্রমণ করার  উদ্দেশ্যে টাকা জমানো শুরু করে ।প্রতিমাসে একশ টাকা করে মোট তিরিশজন টাকা জমা রাখতাম আমাদের বন্ধুদলের কো অপারেটিভ সংস্থায়।  দশ বছরে অনেক টাকা জমেছে।জীবনটা ঠিক ছবির মত। মন খেয়ালের তুলিতে রাঙানো যায় জীবনটা মধুবনি কৌশলে।


আমাদের দলের ক্যাপটেন বিশু বলে, ঠিক দেড়শ বছর আগে রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লব বিশ্বের আরও অনেক দেশের মতো ভারতেও কমিউনিস্ট আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিল।গত শতাব্দীতে ভারতের বামপন্থী রাজনীতিও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গেছে, আর তাতে অক্টোবর বিপ্লব তথা সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল আগাগোড়াই।রুশ বিপ্লবের নায়ক ভ্লাদিমির লেনিন বা তার উত্তরসূরী স্তালিন একটা পর্বে ভারতের কমিউনিস্টদের প্রবলভাবে আলোড়িত করেছেন, কিন্তু পরে চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব বা মাও জে দংয়ের আবেদনই যে ভারতের বামপন্থীদের কাছে বড় হয়ে ওঠে তাতেও বোধহয় কোনও ভুল নেই।



কিন্তু ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসে একশো বছর আগেকার সেই অক্টোবর বিপ্লব ঠিক কীভাবে ছায়া ফেলেছে?বিশ্ব জুড়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনের একটা মূল কথাই হল আন্তর্জাতিক সংহতি বা সলিডারিটি।


 সুদূর রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের ঢেউ ভারতে আছড়ে পড়েই যে এদেশে কমিউনিজমের বীজ রোপিত হয়েছিল তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই।আমাদের বন্ধু মীর আলি বলেন,  ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক জনমত গড়ে তোলেন শেখ মুজিবুর রহমান। যার প্রতিফলন দেখা যায় ১৯৭০ সালের নির্বাচনে।শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ।১৯৭১ সালে সিপিআই(এম-এল) ভেঙে দু টুকরো হয়ে যায়। চারু মজুমদারের দল থেকে সত্য নারায়ন সিং বেরিয়ে যান। ১৯৭২ সালে চারু মজুমদার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন । 



তাত্ত্বিক নেতা সরোজ দত্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেলে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পলিটব্যুরোর অন্যতম নেতা সুশীতল রায়চৌধুরী আত্মগোপন থাকা অবস্থায় মারা যান। প্রধান নেতৃবর্গের বড় অংশই জেল বন্দী হন। পরে নকশালপন্থী দল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) বহু ধারা উপধারায় বিভক্ত হয়ে যায়। অনেক বছর পরে অন্যতম প্রধান নেতা কানু সান্যাল ২০১০ সালের ২৩শে মার্চ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ী থানার হাতিঘিষা গ্রামের নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। শারীরিক অসুস্থতা সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।


 আমাদের সংস্থার সদস্য সংখ্যা কুড়িজন। আমরা গ্রামে গ্রামে গরীব লোকদের সাহায্য করি, অসহায় লোকের পাশে দাঁড়াই। এখন ১৯৮০ সাল। দশ বছরে আমরা অভিজ্ঞ হয়েছি কিন্তু বড় হইনি মনে। মন রয়ে গেছে অঙ্কুরে।আমরা যাত্রাদল খুলেছি,বড়দের নিয়ে।  বিভিন্ন জায়গায় বড়দের সঙ্গে যাত্রাপালা দেখতে যাই । আমাদের কোন মোবাইল গেম ছিল না। তবু কত আনন্দ ছিল। আমরা এখন সকলে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চমাধ্যমিকে ভরতি হয়েছি। 


অজয় নদ সংলগ্ন গ্রামে যত কবি সাহিত্যিক আছেন আমরা তাঁদের জন্মদিন পালন করি। তাঁদের জীবন ও কৃতিত্ব নিয়ে আলোচনা করি। আমাদের সংস্থার নাম, জোয়ার। নামে কি আসে যায়। কাজটাই প্রধান। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম এক নম্বর ব্লকের অধীনে গ্রামগুলির ছেলে আমাদের বন্ধুদলে আছে। আট থেকে আশি বছরের বন্ধু আছে আমাদের দলে।।


প্রবাদবাবু ছিলেন বিরাশি বছরের তরতাজা তরুণ।তিনি এই বয়সেও তাঁত নিজের হাতে চালান। ওনার বাড়ি আমাদের গ্রাম থেকে দূরের একটি গ্রামে। তিনি মাসে একবার করে আসতেন আমাদের মজলিশে। তিনি ছিলেন আমাদের সিনিয়র ফ্রেন্ড। প্রবাদবাবু বললেন, কতবার বলেছি একবার আমার তাঁত দেখতে চল তোমরা, তো তোমরা শুনছ না কথাটা।বিশু বলল,যাব একদিন নিশ্চয় যাব। 


আপনি বুঝিয়ে আমাদের তাঁত সম্বন্ধে কিছু বলবেন। বিশু ছিলো পটশিল্পীর নাতি। তবে বিশুর বাবা ভারতীয় সৈন্য বিভাগে কাজ করেন। বিরাজুলের নানা ছিলেন শিলকোটানির শিল্পী।তবে বিরাজুল এখন চাকরি করে। রমেনের দাদু ভুলোলাগা বামুনের অভিনয় করত। আমার দাদু ছিলেন যাত্রাশিল্পী।তখন যাত্রাদলে মহিলারা আসেবর্ধমান জেলা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত বর্ধমান বিভাগের একটি জেলা। এটি মূলত কৃষি প্রধান জেলা। একে পশ্চিম বঙ্গের শস্য ভান্ডার বলা হয়। জেলার বৃহত্তম শহর বর্ধমান মহানগর। ধান এ জেলার প্রধান ফসল। 



এ ছাড়া গম, পাট, আলু, পেঁয়াজ, আখ হয়। জেলার রানিগঞ্জ এবং আসানসোল কয়লাখনির জন্য প্রসিদ্ধ। দুর্গাপুরে আছে লৌহ-ইস্পাত কারখানা। মীর আলি কম আসত আড্ডায়। ওর বাড়ি বিল্বেশ্বর গ্রামে। পায়ে হেঁটে সাত মাইল পথ।বিরাজুল ছিল ভ্রমরকোল গ্রামের ছেলে। বিশু, আমি ও রমেন একই গ্রামের ছেলে।অরিন্দম, সোহন,অশোক,বিথিকা, অপরূপা  ও আরও অনেকে পাশাপাশি গ্রামের ছেলেমেয়ে। সব খবর ছড়িয়ে পড়ত বাতাসে বাতাসে। সকলে আমরা সকলের আত্মীয়র মত হলে গ্রাম্য হিংসা বা রাজনীতি কম ছিল না।


 একশজনের মধ্যে চল্লিশ শতাংশ অপরের সমালোচনা করতে ভালবাসে,হিংসা করে আর ভালো লোককে, গরীব লোকদের একঘরে করে অত্যাচার করে। সর্দার পাড়ার,হাজরা,পাড়ার,বায়েনপাড়ার লোকদের অস্পৃশ্য, অশুচি বলে। এই তো গতমাসে বিমান বামুন প্রাতঃকালে ভ্রমণে গিয়ে হাজরাপাড়ায় দেহ রাখলেন। শেষবারের মত জল দিয়েছিল ধাতৃমাতা বিশাখা হাজরা। বিমান বামুন ওকে বেসকা নামে ডাকত। শোনা যায় যৌবনে অই বেসকার সঙ্গে বিমান বামুনের প্রেম ছিল। বেসকা ঝিগিরি করত ওদের বাড়িতে।বেসকা বলত, বামুনের রূপ দেখেছি চেঁটে খাওয়ার সময়। 


শেষে সে জল খেল ওর হাতেই। জীবন এইরকমই। জেলা সদর বর্ধমান থেকে অল্প দূরে কাঞ্চন নগর ছুরি, কাচির জন্য প্রসিদ্ধ। ধাত্রিগ্রাম তাঁতের কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ।ন নি। দাদু মহিলা সেজে চমৎকার অভিনয় করতেন। অবিভক্ত  বর্ধমান জেলার অজয় নদের উপর কাশীরামদাস সেতু কেতুগ্রাম থানার চড়খী গ্রামে অবস্থিত।কাটোয়া মহুকুমা বিরাট এলাকা।আমাদের এলাকার লোকেরা বেশিরভাগ কৃষিকাজে যুক্ত। তাছাড়া তাঁতি, পটশিল্পী,শিলকোটানি,ছুতোর, জেলে,কুমোর,কামার সকলে মিলিত হয়ে বাস করেন এখানে। একদিকে কেতুগ্রাম থানার বিভিন্ন গ্রাম আর একদিকে কাটোয়া থানার বিভিন্ন গ্রামের পরিবেশ, প্রাচীন কবি সাহিত্যিক ও সমাজজীবন নিয়ে চলছে প্রবাহ । 


অজয় নদের ধারে ধারে গীতগোবিন্দম এর রচয়িতা  কবি জয়দেব থেকে শুরু করে চুরুলিয়া গ্রামের কবি নজরুল,কোগ্রামের কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া কাটোয়া মহুকুমার কড়ুই গ্রামে কবিশেখর কালিদাস রায় ও সিঙ্গি গ্রামের কবি কাশীরামদাস উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া এখনকার কবি সাহিত্যিকগণ এই কাটোয়া মহুকুমার গর্ব। 


আধুনিক কালে আটের দশক থেকে শুরু করে শূণ্য দশকের অনেক কবিসাহিত্যিক এই কাটোয়া মহুকুমার প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করেন। অজয়ের পলি শুধু চাষরবাসে নয় মনজমির উর্বরতাও বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। বিশু আমাদের দলের প্রধান। আমাদের একটা কো অপরাটিভ সংস্থাও আছে।আমরা সকলে সদস্য এই সংস্থার।বিশু বলে, অজয় নদের জল বাড়লেই আমাদের কাঁদরের জলও বাড়ে।এই কাঁদরের নাম ঈশানী নদী। এঁকেবেঁকে গঙ্গাটিকুরী, বেলুন,কেতুগ্রাম ভুলকুড়ি প্রভৃতি অসংখ্য গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত। এই কাঁদরে আমরা মাছ ধরি, চান করি, চাষের জমিতে জল দিই। ভারতবর্ষের নদ নদীগুলো আমাদের মা। তাই আমাদের দেশ নদীমাতৃক। কেতুগ্রামের  বিরাজুল, সিরাজ আমাদের প্রিয় বন্ধু। 


আমাদের একটা সাহিত্যচক্র হত মাসে মাসে। সেখানে নানা জ্ঞানীলোকের সমাগমে আমরা কবি জয়দেব থেকে শুরু করে কবি রাজকুমার রায় চৌধুরী, কবি মহম্মদ মতিউল্লাহ ও কাটোয়ার উঠতি কবি লেখকদের সম্পর্কে জানতে পারতাম।আজ প্রফেসর ডঃ দাস এসে বলছেন সাহিত্যের কথা। তিনি একটা বর আলোচনা শুরু করলেন। তিনি বললেন,, ম্যাক ক্রিন্ডল সম্পাদিত ভারতের প্রাচীন ইতিহাস অনুযায়ী মেগাস্থিনিসের যুগে অম্যস্টিস নামে একটি নদীর উল্লেখ আছে যা কাটাদুপা শহরের কাছে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আরেকজন ইতিহাসবিদ উইলফ্রেড মনে করেন সেই অম্যস্টিস হল বর্তমান অজয়ের কোন প্রাচীন নামের অপভ্রংশ। 


 সাম্প্রতিক খননকার্যের ফলে অজয় নদের উপত্যকায় পাণ্ডু রাজার ঢিপিতে সিন্ধু সভ্যতার সমসাময়িক প্রাচীন সভ্যতার নানা নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীতে অজয় নদে কম করে ২০ টি বন্যার লিখিত নথি আছে। নদের নিম্নভাগের বন্যা প্রতিরোধের জন্য বাঁধ রয়েছে। তেরশ শতকে গীতগোবিন্দর লেখক কবি জয়দেবের জন্মস্থান বীরভূম জেলার কেঁদুলি গ্রামে ও কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মস্থান বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামের অজয় নদীর ধারে।বার’শ শতকের  সংস্কৃত কবি জয়দেব।



পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার অজয়নদের তীরবর্তী কেন্দুবিল্ব বা কেঁদুলি গ্রামে তাঁর জন্ম। কেউ কেউ তাঁকে মিথিলা বা উড়িষ্যার অধিবাসী বলেও মনে করেন। তাঁর পিতা ছিলেন ভোজদেব, মাতা বামাদেবী এবং  স্ত্রী পদ্মাবতী।জয়দেব ছিলেন লক্ষ্মণসেনের রাজসভার পঞ্চরত্নের অন্যতম; অপর চারজন হলেন  গোবর্ধন আচার্য,  শরণ,  ধোয়ী ও  উমাপতিধর। কারও কারও মতে তিনি কিছুকাল উৎকলরাজেরও সভাপন্ডিত ছিলেন।গীতগোবিন্দম্-এর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এতে চরণশেষে অন্তমিল অনুসৃত হয়েছে, যা সংস্কৃত সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রায়শই দুর্লভ। 


এর ভাষা সহজ-সরল এবং প্রায় বাংলার কাছাকাছি। সংস্কৃত ও বাংলার যুগসন্ধিক্ষণে রচিত বলে গ্রন্থটির ভাষা এরূপ সহজ ও বাংলার অনুগামী হয়েছে।বিশু বলে, শ্রীধরদাসের কোষকাব্য সদুক্তিকরণামৃতে গীতগোবিন্দম্-এর ৫টি শ্লোক ব্যতীত জয়দেবের নামাঙ্কিত আরও ছাব্বিশটি শ্লোক পাওয়া যায়। শিখদের ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থসাহেবে  জয়দেবের দুটি শ্লোক উদ্ধৃত হয়েছে। নাভাজি দাসের ভক্তমাল, হলায়ুধ মিশ্রের  সেখশুভোদয়া প্রভৃতি গ্রন্থে এবং প্রচলিত জনশ্রুতিতে জয়দেব ও পদ্মাবতী সম্পর্কে নানা কাহিনী প্রচলিত আছে। বৈষ্ণব সহজিয়াগণ জয়দেবকে আদিগুরু এবং নবরসিকের অন্যতম বলে মর্যাদা দিয়ে থাকেন। বীরভূমের কেন্দুবিল্বতে প্রতিবছর পৌষ সংক্রান্তিতে জয়দেব উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যা ‘জয়দেব মেলা’ নামে পরিচিত। এ মেলায় এখন বাউলদের সমাবেশ এবং বাউল আখড়াসমূহ বিশেষ আকর্ষণীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে।


 বিহারের জামুই জেলা চাকাই ব্লকের বাটপার অঞ্চলের ৩০০ মিটার উচু পাহাড় থেকে উৎসারিত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে এটি দেবীপুরের নিকটে ঝাড়খণ্ডে প্রবেশ করে (দেওঘরের প্রস্তাবিত শিল্প অঞ্চল) দিয়ে গিয়ে অজয় নদ ঝাড়খণ্ডের উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার চিত্তরঞ্জনের নিকট শিমজুড়িতে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে এবং এটি প্রথম পশ্চিম বর্ধমান জেলা এবং ঝাড়খণ্ড হয়ে এবং পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া ঘাট, বীরকুলটি ঘাট, দরবারডাঙা ঘাট ও সিদ্ধপুর ঘাট হয়ে এবং বীরভূম জেলার বড়কোলা, তামড়া, বিনুই ও নবসন গ্রামের সীমানা হয়ে পূর্বে প্রবাহিত হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার কেতুগ্রাম থানার নারেং গ্রামের প্রবেশ করে কাটোয়া শহরের কাছে ভাগীরথী নদীর সংগে মিলিত হয়েছে। 


অজয় নদের মোট দৈর্ঘ্য ২৮৮ কিলোমিটার  তার মধ্যে শেষ ১৫২ কিলোমিটার পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে। অজয়ের প্রধান উপনদীগুলি হল ঝাড়খণ্ডের পাথরো ও জয়ন্তী এবং বর্ধমানের তুমুনি ও কুনুর।অজয় নদের ধারা থেকে অনেকদুর অবধি পার্বত্য অঞ্চলের ল্যাটেরাইট মাটির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বর্ধমানের আউশগ্রামে এসে পাললিক সমভূমিতে প্রবেশ করে। অজয় নদের উপত্যকায় শাল,  ও পলাশের ঘন জঙ্গল ছিল। কিন্তু অধুনা খনিজ নিষ্কাষণ ও অন্যান্য মনুষ্যজনিত উপদ্রবে বেশিরভাগ জঙ্গল সাফ হয়ে গেছে।


সম্প্রতি, ভারত সরকার  অজয় নদকে জাতীয় নৌপথ আইন, এর আওতায় জাতীয় জলপথ সাত, হিসাবে ঘোষণা করেছে।আমি জানি  কাটোয়া মহুকুমা ও কেতুগ্রাম থানার গ্রামগুলিতে বাস করি আমরা। কাটোয়া মহুকুমার মধ্যে প্রতিটি ব্লকের অন্তর্গত গ্রামগুলিকে  নিয়ে  পথচলা আমাদের । তাছাড়া অজয় নদের ধারে ধারে অনেক কবি সাহিত্যেকের জন্মস্থান। 


এবার আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখলেন কবি তারকেশ্বর চট্টরাজ।তিনি বলতে শুরু করলেন, কবি নজরুল ইসলামও অজয় নদের ধারে অবস্থিত চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বিশু বলে, চুরুলিয়ার অবস্থান ২৩.৭৮° উত্তর ৮৭.০৮° পূর্ব] সমুদ্রতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ৯৪ মিটার।  চুরুলিয়া অজয় ​​নদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত।আসানসোল ঢেউ খেলানো ল্যাটেরাইট অঞ্চল দ্বারা গঠিত। দামোদর এবং অজয় ​​এই অঞ্চল দুটি শক্তিশালী নদীর মধ্যে অবস্থিত। 



আর একজন বলেন,এ অঞ্চলে উপর দিয়ে একে অপরের সাথে সমান্তরালভাবে প্রবাহিত হয়, দুটি নদীর মাঝখানের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। যুগ যুগ ধরে এই অঞ্চলটিতে প্রচুর বনভূমি সৃষ্টি হয় এবং তার ফলে ডাকাত এবং খুনীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। 


অষ্টাদশ শতাব্দীতে কয়লার আবিষ্কারের ফলে এই অঞ্চলটি শিল্পায়নের দিকে ধাবিত হয়। কিন্তু. এরফলে বেশিরভাগ বনভূমি সাফ হয়ে গেছে।এখন পশ্চিম বর্ধমানে অবস্থিত। পূর্বে বর্ধমান জেলা হিসাবে পরিচিত ছিল।অবশ্যই আমাদের গর্ব এই কবির কথা অনেকের কাছে জেনে আমরা গর্বিত।আলোচনা শেষে সকলে বাড়ি যেতেন পরবর্তী আসরে আসার কথা দিয়ে।



আমদের এলকার সিঙ্গি,রামদাসপুর,চাঁড়ুলে গ্রামের  তাঁতিপাড়ায় তাঁত বোনা হত। কুমোরপাড়া, কামারপাড়া,ছুতোরপাড়া,মুড়ি আর চিড়া তৈরির পাড়া ছিল। আশেপাশে আঠারোপাড়া গ্রামে বিভিন্ন জীবিকা ছিল তখনকার মানুষের। কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে ছিল লাঙ্গলের ফলা, কাস্তে, নিড়ানি, খুন্তি ইত্যাদি।কামারদের কারখানা ক্ষুদ্রশিল্পের আওতায় পড়ে। কামারের কর্মস্থলকে বলে কামারশালা। কামারশালায় হাপর দিয়ে কয়লার আগুন-কে উস্কে রাখা হয়।


 এই আগুনে লোহা গরম করে তাকে পিটিয়ে বিভিন্ন আকারের জিনিস তৈরি হয়।বাংলাদেশের অধিকাংশ কামারই বৈষ্ণব হলেও কিছু শাক্তধর্ম ধর্মালম্বী কামারও দেখা যায়।কুম্ভকার বা কুমোর একটি পেশা। এই পেশার মানুষ মৃৎশিল্পী - মাটি দিয়ে পাত্র, খেলনা, মূর্তি ইত্যাদি তৈরি করে। কুম্ভকার শব্দটির অর্থই হল কুম্ভ অর্থাৎ কলসি গড়ে যে শিল্পী। 


কুমোররা মিলে যে পাড়ায় থাকে তাকে বলে কুমোরপাড়া বা কুমোরটুলি। কুমোররা গোল আকৃতির জিনিস বানাবার জন্যে একটি ঘুরন্ত চাকা ব্যবহার করে।বিভিন্ন সাজে মানুষকে আনন্দ দেয়,বহুরূপী সম্প্রদায়।বীরভূম থেকে এক দাদু সেজে আসতেন মেয়েদের সাজে। ঘুঙুর বাজিয়ে বলতেন, খিচাক দম, আলুর দম, আমার বাড়ি বীরভূম।


 সিউড়িতে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়াতে দেখা গেল বীরভূমের বহুরূপী সম্প্রদায়ের মানুষদের। সিউড়ির ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে করোনা ভাইরাসের সাজে পথে বেরিয়ে আসা মানুষদের সচেতনতা করেন তাঁরা। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এতদিন এদের দেখা গেছে কালী, কৃষ্ণ, শিব, হনুমান, রঘু ডাকাত, দৈত্য ও ছিনাথ বহুরুপীর বেশে। এবার জেলার মানুষকে করোনা ভাইরাসের বিপদ থেকে সচেতনতা করার জন্য করোনা ভাইরাসের সাজে দেখা গেল বহুরূপী সম্প্রদায়ের এই মানুষদের। বীরভূমের লাভপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোট্ট গ্ৰাম বিষয়পুরের ব্যাধ পাড়ায় এই বহুরূপী সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন।



বাংলার পটচিত্র পট বা বস্ত্রের উপর আঁকা একপ্রকার লোকচিত্র। এটি প্রাচীন বাংলার (বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত অঞ্চল) অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। প্রাচীনকালে যখন কোন রীতিসিদ্ধ শিল্পকলার অস্তিত্ব ছিলনা তখন এই পটশিল্পই বাংলার শিল্পকলার ঐতিহ্যের বাহক ছিল। যারা পটচিত্র অঙ্কন করেন তাদেরকে সেযুগে এবং এযুগেও পটুয়া বলা হয়। এরা পট দেখানোর সাথে সাথে গান করেন।


 লোকে খুশি হয়ে এনাদের পুরস্কৃত করেন। চিনির গোল্লা তৈরি করে চাকা ঘুরিয়ে শোনপাপড়ি বিক্রি করত কানাইদা।কত রঙ বেরঙের ফাঁপা শোনপাপড়ি। বড় গোল ফুটবলের মত। খেলেই মিলিয়ে যেত নিমেষে।আমরা বলতাম, দিল্লি কা লাড্ডু।বড় মোটা বাঁশের ডগায় চিনির লেই পাকিয়ে জড়িয়ে রাখত রঙ বেরঙের লাঠি মিষ্টি। মনাদা এলেই আমরা ভিড় করতাম পয়সা হাতে।মনাদা রঙীন চিনির লেই দিয়ে পুতুল বানাতেন। কাউকে দিতেন খরগোশ, আবার কাউকে দিতেন হরিণ বানিয়ে। বড় সুন্দর ছিল দিনগুলি।ছুতোর বা ছুতার বঙ্গ অঞ্চলের একটি পেশাজীবি শ্রেনীর নাম।



 ছুতোররা কাঠ মিস্ত্রি নামেও পরিচিত, অর্থাৎ এরা কাঠের কাজ করে। ছুতোর বা কাঠ মিস্ত্রি শব্দের ইংরেজি Carpenter। সংস্কৃত সূত্রধর শব্থেকে ছুতোর শব্দটির উত্তপত্তি। বর্ণাশ্রয়ী হিন্দু সমাজ ব্যবস্থায় যে জনগোষ্ঠী কাঠের কাজ করে জীবিকা নিবার্হ করতো তাদের সূত্রধর বা ছুতোর বলা হতো। একটি হিন্দু জাতি বিশেষের পদবি হিসেবেও সূত্রধর শব্দটি ব্যবহার করা হয়।বেলুনগ্রামে চিড়া তৈরি হত। আমরা ধান দিয়ে আসতাম। তারপর পনের দিন পর চিড়া,নিয়ে আসতাম।ধান কেটে ঝাড়াই-মাড়াই করে রোদে শুকিয়ে ধানের আর্দ্রতা ১০–১২ শতাংশের মধ্যে আনতে হবে। 


শুকনো ধান কুলোয় ঝেড়ে অথবা ব্লোয়ার চালিয়ে জোরে হাওয়া দিয়ে চিটে মুক্তো করতে হবে। চিটেমুক্ত শুকনো ধান ঠান্ডা জলে ২৫–৩০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখা হয়। তবে ধান ভেজানোর আগে জল উষ্ণ উষ্ণ গরম করে নিতে পারলে চিঁড়ে দীর্ঘ দিন মজুত করা সহজ হয়। উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময় ধরে ধান ভেজার পর ধান তুলে জল ঝরিয়ে ফেলা হয়।এর পর ভিজে ধান ঢিঁকেতে ফেলে পেটানো হয়। বর্তমানে চিঁড়ে তৈরির কল বেরিয়েছ। চিঁড়েকলে রোলারের চাপে ধান চ্যাপ্টা হয়ে যায়। ধানের খোসাও রোলার ঢেঁকির চাপে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে চাল থেকে আলাদা হয়ে বেরিয়ে আসে।



 ঢেঁকিতে অথবা চিঁড়েকলে ধান চাপানোর আগে বালি খোলায় অল্পক্ষণ ভেজে নিতে পারলে চিঁড়ের গুণমান বর্ধিত হয়।অতঃপর ঢেকির খোল অথবা চিঁড়েকল থেকে খোসামিশ্রিত চিঁড়ে বের করে নেওয়া হয়। এবং তারের জালের বড়ো চালুনিতে ফেলে উত্তম রূপে চালা হয়। গুঁড়ো চালুনির তলায় পড়ে যায়। চালুনির উপরে চিঁড়ে আলাদা হয়ে জমা হয়।বর্তমানে অবশ্য অধিকাংশ চিঁড়েই ভাঙানো কলে তৈরি হচ্ছে। কেননা ঢেঁকির প্রচলন কমে গিয়ে তলানিতে এসে পৌছেছে।উপরোক্ত পদ্ধতিতে প্রস্তুত চিটেমুক্ত শুকনো ধান লোহার কড়ায় বালির ওপর ফেলে ভাজা হয়। 


ভাজার সময় গরম বালি-সহ ধান অনবরত নাড়তে হয়। নাড়তে নাড়তেই ধানের খোসা সরিয়ে বেরিয়ে আসে খই। তবে খইয়ের নীচের দিকে তখনও ধানের খোসা আলগা ভাবে আটকে থাকে। খোসা সুদ্ধ খইয়ের পর তারের চালুনিতে ফেলে বেশ কয়েক বার নাড়াচাড়া করলে খোসা ও খই আলাদা হয়ে যায়। চালুনির ফাঁক গলে খোসা নীচে পড়ে। চালুনির ওপরে থেকে যায় খই। বর্তমানে খই তৈরির মেশিন বেরোলেও রাজ্যের অধিকাংশ খই এখনও গাঁয়েগঞ্জে বালি খোলাতে ভেজে তৈরি করা হয়। সব ধানের খই ভালো হয় না। উত্কৃষ্ট খই বানানোর জন্য নির্দিষ্ট কিছু ধানের জাত চাষ করা হয়ে থাকে। 




যেমন সুগন্ধি খইয়ের জন্য চাষ করা হয় কনকচূড় ধান।ধান সিদ্ধ শুকনো করে যা চাল তৈরি হয় সেই সিদ্ধ চাল থেকেই মুড়ি বানানো হয়। মুড়ি বানানোর প্রথম ধাপে জল ঝরানো ভেজা চাল আগুনে বসানো শুকনো কড়ায় ফেলা হয়। 


এর পর চালের ওপর মাপমতো নুন/খাবার সোডা ফেলে কড়া চাল ততক্ষণ নাড়াচাড়া করে যেতে হবে যতক্ষণ না আঠালো হয়। চাল আঠালো হয়ে গেলে কড়া থেকে নামিয়ে বস্তায় মুখ বেঁধে ১ – ২ দিন ফেলে রাখা হয়।দ্বিতীয় ধাপে বস্তা থেকে চাল বার করে আগুনের ওপর বসানো শুকনো কড়ায় ভাজতে হবে। শুকনো কড়ায় নাড়াচাড়া করতে করতে ততক্ষণ ভাজতে হবে যতক্ষণ না চাল লাল হয়ে ঠিকমতো শক্ত হয়। যাতে দাঁতে কাটলে ‘কট’ করে শব্দ করে দু’ খানা হয়ে ভেঙে যায়, গুঁড়ো হয়ে বা চেপ্টে যায় না।তৃতীয় দফায় এই ভাবে ভাজা চাল কড়ায় জ্বাল দিয়ে গরম করা বালির ওপর ফেলতে হবে। 


ফেলে বালিশুদ্ধ চাল নাড়াচাড়া করতে হবে। বালি ঠিকমতো গরম হলেই চাল ফুটে মুড়ি তৈরি হবে। বালিশুদ্ধ গরম মুড়ি চালুনিতে চেলে নিলেই বালি তলায় পড়ে গিয়ে মুড়ি আলাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে।সব ধানের মুড়ি সুস্বাদু না হলেও বর্তমানে জাতের বাছবিচার না করে যে কোনও ধানের চাল থেকেই মুড়ি তৈরি হচ্ছে। এবং বাজারে বিক্রি হচ্ছে। কেবলমাত্র গাঁয়েগঞ্জে নয়, শহরের উপকণ্ঠে এখনও আগুনের আঁচে শুকনো খোলায় ও বালি খোলায় মুড়ি ভাজার কাজ চলছে বাণিজ্যিক ভাবে। তবে মুড়ির চাহিদা বাড়ার যান্ত্রিক কলে মুড়ি বানানো ক্রমশই বাড়ছে।




সিদ্ধ শুকনো ধানের বদলে শুকনো চাল সরাসরি ধান কলে ভাঙিয়ে যে চাল পাওয়া যায় সেই আতপ চাল থেকেই চালভাজা বানানো হয়। খই, চিড়ে, মুড়ির তুলনায় চালভাজার চাহিদা নগণ্য। তবুও শহর ও শহরতলিতে হামেশাই রাস্তার পাশে বালতি উনুনে লোহার কড়ায় বালি খোলায় চালভাজা তৈরি হতে চোখে পড়ে। খই, মুড়ি অথবা চিড়ে অপেক্ষা চালভাজা তৈরির পদ্ধতি অনেক সহজ। কড়ার এক তৃতীয়াংশ বালি ভরে উনুনে বসানো হয়। বালি গরম হলে শুকনো চাল ফেলে নাড়া চাড়া করতে করতে ততক্ষণ ভাজা চলে যতক্ষণ না চাল পট পট করে ফাটতে শুরু করে। 


পট পট করে চাল ফোটার ৫–১০ মিনিটের মধ্যেই চালভাজা তৈরি হয়ে যায়।আমাদের দলে বিশু ওরফে দিলীপ ছিল ক্যাপটেন।আমরা ওকে বিশু বলে ডাকি।  তাছাড়া রিলিফ, বাবু, রমেন, বিরাজুল,বিশ্বরূপ, মিলু, অধির,পিনু,রমেন, নোটন, আশীষ,অপরূপা,টুম্পা,পুমণি,মনু,বুড়ি কত সঙ্গি ছিল।  সকলে আমরা তার কথামত চলতাম।





 (ক্রমশ)



সুদীপ ঘোষাল 

পূর্ব বর্ধমান 

৮৩৯১৮৩৫৯০০.


webtostory